ঢাকাশুক্রবার , ১০ অক্টোবর ২০২৫
  1. আজ দেশজুড়ে
  2. আজকের সর্বশেষ
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আশাশুনি
  5. কলারোয়া
  6. কালীগঞ্জ
  7. কৃষি সংবাদ
  8. খেলাধুলা
  9. গণমাধ্যম
  10. গ্রামীণ সাংবাদিকতা
  11. চাকরির খবর
  12. জাতীয়
  13. জীবনযাপন
  14. তারুণ্য
  15. তালা

কবিতা: চোখের ভাবনায় তুমি, লেখক: এম. এ গফফার

এম. এ. গফফার
অক্টোবর ১০, ২০২৫ ৪:৩৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

চোখের দৃশ্যময় ভাবনায় তুমি
মিশে রয়েছো মনেরই গভীরে;
সেই শ্রাবণ বাতাসের বৃষ্টির
সুরেলা রাগিণীতে হৃদয়-বীণায়।
ভাবি তোমায়,
চোখের ভাষায়, মনের কণ্ঠে, নিশি
জাগা রজনীতে ভাবি তোমায়।

[এই স্তবকে কবি প্রিয়জনকে তাঁর চিন্তা ও অনুভূতির কেন্দ্রে স্থাপন করেছেন। বাইরের দৃশ্য (চোখ) এবং ভেতরের অনুভূতি (মন) – সবখানেই প্রিয়জনের উপস্থিতি। শ্রাবণ মাসের বৃষ্টি এবং তার সুরেলা রাগিণী একটি রোমান্টিক ও আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। “নিশি জাগা রজনীতে” ডাকার মাধ্যমে প্রিয়জনের জন্য কবির ব্যাকুলতা ও গভীর ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।]

কর্মব্যস্ত ভুবনে জন-কোলাহল
যখন থেমে যায়, প্রকৃতি
আঁধারের নীরবতায়; তখনই চোখের
ব্যাকুল ভাবনায়, গানের ছন্দে
হৃদয়ের ভাবনায় লিখে যাই তোমায়।
‘না যেও না,
রজনী এখনও বাকি,
আরো কিছু দেবার বাকি,’
বলে রাত-জাগা পাখি
‘না যেও না…’।

[এখানে কবি বোঝাতে চেয়েছেন, জীবনের ব্যস্ততা (জল-কোলাহল) থেমে যাওয়ার পর, অর্থাৎ একান্ত নিরালার মুহূর্তে (আঁধারের নীরবতা), প্রিয়জনের প্রতি তাঁর অনুভূতি তীব্র হয়। তিনি গানের ছন্দে তাঁকে লিখে যান। শেষের অংশে রাত-জাগা পাখির প্রতীকের মাধ্যমে প্রিয়জনকে থেকে যাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন, যা ভালোবাসার এক অপূরণীয় চাহিদা ও হতাশা প্রকাশ করে।]

নিয়তির চিরন্তন ডাকে মানুষ
চলে যাবে অজানা দেশে—
তা বাস্তব সত্য?

কিন্তু চলে যাওয়ার স্মৃতি-বিজড়িত
দৃশ্যবলী অমর হয়ে থাকবে!
মাধবী রাতের নীরবতায়, সাগরের
জলস্রোত-ধারায়, চাঁদের সোনালি
আলো যেন, পৃথিবীর প্রকৃতিকে
অপূর্ব সাজের মায়া-আবরণে
করেছে আলোকিত।
সেই জলজ্যোৎস্নার নীরবতায় মনের
ভাবনায় ভাবি তোমায়।

[এই অংশে কবি জীবনের চরম সত্য, অর্থাৎ মৃত্যু ও নিয়তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে, তিনি বিশ্বাস করেন যে স্মৃতি অমর হয়ে থাকবে। মাধবী রাত, সাগরের জলস্রোত, এবং চাঁদের সোনালি আলোর প্রাকৃতিক উপমাগুলি স্মৃতির স্থায়িত্ব ও সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তুলেছে। এই মনোমুগ্ধকর পরিবেশে কবির মন পুনরায় প্রিয়জনের ভাবনায় নিমগ্ন হয়।]

জীবনের পথ-চলার গতিবেগ হয়তো
কোনো এক মুহূর্তে থেমে যাবে,
আঁধারে ঢেকে যাবে জীবনের
জীবন্ত জ্যোতি।
জীবন-পাতার বাস্তব স্মৃতিগুলো
অমর হয়ে থাকবে বাস্তবতার মাঝে।
জীবন-নদীর তরী-হীন মাঝি
চলে যাবে চির-অজানায়,
সাগরের বহমান জলস্রোতে মিশে
তরী বিচরণ করবে এ প্রকৃতির
ভুবনে।

[এই স্তবকে কবি জীবনের নশ্বরতা ও অনিবার্য সমাপ্তি (“থেমে যাবে”, “আঁধারে ঢেকে যাবে”) মেনে নিয়েছেন। তিনি নিজেকে ‘তরী-হীন মাঝি’ রূপে কল্পনা করেছেন, যিনি একসময় চির-অজানায় চলে যাবেন। তবে, প্রিয়জনের বাস্তব স্মৃতি অমর হয়ে থাকবে। শেষ দুটি পঙক্তিতে আশা করা হয়েছে যে ভালোবাসার স্মৃতি ও প্রভাব (তরী) প্রকৃতির মাঝে চিরকাল বিচরণ করবে।]

নয়নের তারায়, নয়নের কাজলে
লিখেছি তোমায়।
হয়তো জীবন-পথের অবসানে
তুমি হারিয়ে যাবে অজানায়।
বহমান দিন চলে যাবে, বৎসর
চলে যাবে, চলে যাবে সময়ের গতি;
তবুও মনের আবেগ-অনুপ্রেরণায়
ভাবি তোমায়।

[এটি কবিতার উপসংহার। কবি পুনরায় প্রিয়জনকে চোখের কাজলের মতো অত্যন্ত ব্যক্তিগত ও গভীর স্থানে স্থাপন করেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে সময় (দিন, বৎসর, গতি) এবং জীবন-পথের অবসান সবকিছুকে গ্রাস করবে। এতকিছুর পরেও, প্রিয়জনের প্রতি কবির মনের আবেগ ও অনুপ্রেরণা কখনও ফুরোবে না। এই স্তবকে ভালোবাসার স্থায়িত্ব এবং সময়ের ঊর্ধ্বে তার স্থানকে তুলে ধরা হয়েছে।]

লেখক: এম. এ গফফার
শেফিল্ড, ইংল্যান্ড
জন্মনিবাস: ঠাঁকুরভোগ, সুনামগঞ্জ।

error: Content is protected !!