সাতক্ষীরার তালা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখল, ৪৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি এবং কারখানায় ভাঙচুরের মতো ঘটনায় তিনি অভিযুক্ত হয়েছেন। এ অভিযোগে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত ২২ আগস্ট তালার শপিং ভ্যালি ফুড প্রোডাক্টস কোম্পানির মালিক অভিযোগ করেন, রফিকুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাদের কাছে ৪৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় তিনি ১৩ জুলাই সেমাই কারখানায় ঢুকে তালা ঝুলিয়ে দেন এবং উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।
কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহর হাসান জানান, কারখানায় ভাঙচুরের পাশাপাশি কর্মকর্তাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনার ভিডিও ও কল রেকর্ড তাদের কাছে সংরক্ষিত আছে।
অভিযোগ শুধু চাঁদা দাবির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। সম্প্রতি তালার হরিশচন্দ্রকাটি গ্রামের তরুণ কান্তি চক্রবর্তী ও সায়রা খাতুন অভিযোগ করেন, রফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা তাদের প্রায় ১৫ বিঘা জমি দখল করে নিয়েছেন। ভুক্তভোগীরা তালা থানায় একাধিকবার অভিযোগ করলেও কোনো সমাধান পাননি।
তরুণ কান্তি চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত। তবুও আমাকে হিন্দু হওয়ার কারণে ভয়ভীতি ও জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এমনকি দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে।’
অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘হিন্দু পরিবারের জমি দখলের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তবে শপিং ভ্যালি কারখানার জায়গায় আমারও অংশ রয়েছে। আমি বলেছি, প্রয়োজনে ৫০টি হত্যা হলেও জমি আমি ছাড়ব না।’
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও তদন্ত কমিটির সদস্য মহাসীন আলম জানান, ‘অভিযোগগুলো তদন্ত করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা অবশ্যই ন্যায় বিচার পাবেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সাতক্ষীরার রাজনৈতিক অঙ্গনে এ ঘটনাকে ঘিরে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, দলে দায়িত্বশীল পদে থাকা একজন নেতার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ গুরুতর ইঙ্গিত বহন করছে।